করোনা নিয়ন্ত্রণে প্রায় এক মাস যে কঠোর বিধিনিষেধ পালন করা হয়েছে, তা ‘পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘সর্বোচ্চ কঠোরতম’ লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ রেখেও সংক্রমণের হার কমেনি। নিম্ন আয়ের অসহায় মানুষকে সহায়তা না দিয়ে জোর করে আটকে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। ফলে এই কথিত কঠোরতম লকডাউনও সর্বতোভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’
করোনার ডেলটা ধরনের দাপটে দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ার প্রেক্ষাপটে গত মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ দেশে কঠোর বিধিনিষেধ দেয় সরকার। এরপর ঈদুল আজহা ঘিরে আবার এই বিধিনিষেধ শুরু হয়, যা মঙ্গলবার শেষ হয়েছে।
করোনার গণটিকাদান নিয়েও সরকারের সমালোচনা করেছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘সরকার টিকা সংগ্রহে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য সোয়া কোটি ডোজ টিকা হাতে রেখেছে। এরপর কয়েক লাখ টিকা দিয়ে গণটিকা কার্যক্রমের নামে এক সার্কাস শুরু করেছে। যাঁরা প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তাঁদের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়ার বিষয়টিও অনিশ্চিত। টিকার রেজিস্ট্রেশন করে মাস পার হয়ে গেলেও বেশির ভাগ মানুষই তারিখ পাচ্ছেন না। আবার তারিখ না পেয়ে টিকাকেন্দ্রে গেলে বলা হচ্ছে, তারিখ পেলে তারপর টিকা দেওয়া হবে। এই তারিখ আসবে কবে? কথিত গণটিকা কার্যক্রমও চলেছে আওয়ামী কোটায়। কবে নাগাদ টিকা পাওয়া যাবে, আদৌ পাওয়া যাবে কি না, সেই ব্যাপারে কিছুই বলছে না সরকার।’
চিকিৎসা ব্যবস্থা ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ হয়ে গেছে মন্তব্য করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, কোথাও আইসিইউ পাওয়া যাচ্ছে না। সেটা বাড়ানোর কোনো উদ্যোগও সরকারের নেই। মানুষের জীবন বাঁচাতে অল্প খরচে যে ‘হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা’ স্থাপন করা যায়, সেই ব্যাপারেও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই তাদের।
মাহমুদুর রহমান বলেন, হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলার অভাব দূর করতে পারে বুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক ড. তৌফিক হাসান এবং সহকর্মীদের উদ্ভাবিত অক্সিজেট। গত বছর থেকে তারা এটি নিয়ে চেষ্টা করে গেলেও সরকারি কোনো পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়নি। তাদেরই বরং অনুমোদনের জন্য ঘুরতে হয়েছে।
সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ করে ব্যাপকভাবে উৎপাদন করে সব হাসপাতালে অক্সিজেট পৌঁছানোর ব্যবস্থা করার দাবি জানান মাহমুদুর রহমান মান্না।