দেশে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ কিছুটা বাড়লেও শনাক্তের হার নেমে এসেছে ৬-এর নিচে। ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের দিন মারা যান ৩৫ জন। সব মিলিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৭ হাজার ২২৫ জনে। একদিনে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৮৩ জন। শনিবার ১ হাজার ১৯০ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৮৩ জন। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ৬ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ। দেশে সুস্থতার সংখ্যা ১৫ লাখ ছাড়িয়েছে। একদিনে আরও ২ হাজার ৮৮৭ জন সুস্থ হয়েছেন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হলেন ১৫ লাখ ১ হাজার ৫৪১ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার এখন নিম্নমুখী বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভার্চুয়াল বুলেটিনে রোববার অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম এ কথা জানান। তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে ৩০ দিনের সংক্রমণের চিত্র এই মুহূর্তে নিম্নমুখী প্রবণতাতেই আছে। সারা দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি আবার শুরুর বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা পাননি জানিয়ে তিনি বলেন, ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে জাতীয় কারিগরি কমিটির পরামর্শে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিদ্ধান্ত নেবে।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় জুন থেকে রোগীর সংখ্যা হুহু করে বাড়তে থাকে। ২৮ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার পর ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যু হয়, যা মহামারির মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১০টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৪৫টি, জিন এক্সপার্ট ৫৫টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন ৬১০টি। এসব ল্যাবে ২৪ হাজার ১২৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয়েছে ২৪ হাজার ৬২৩টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯৪ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫৬টি। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৩৩ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ২২ ও নারী ২১ জন। এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ৩৫ ও বেসরকারি হাসপাতালে আটজন মারা যান। মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ১৯, চট্টগ্রাম বিভাগে আটজন, রাজশাহী বিভাগে চারজন, খুলনা বিভাগে ছয়জন, সিলেট বিভাগে দুজন, রংপুর বিভাগে তিনজন ও ময়মনসিংহ বিভাগে একজন রয়েছেন।
তাদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে একজন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের চারজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের নয়জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের ১০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১০ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের তিনজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে পাঁচজন ও ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন।