করোনায় শ্বাসকষ্টে ভুগে মারা যাচ্ছেন স্থানীয় অনেকেই। পাশের বাড়ির মধ্যবয়স্ক এক নারীও শ্বাসকষ্টে মারা গেলেন। বিষয়টি হৃদয়ে বেশ আঘাত করে চাঁদপুরের ছেলে রুবেল দেওয়ানের।
এর পর করোনায় আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট লাঘবে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। যদিও এই করোনাকালে অর্থাভাবে রয়েছেন তিনি নিজেও।
যে কারণে নিজের উদ্যোগে সহায়তা চেয়ে এলাকায় বন্ধু-স্বজনদের সঙ্গে আলাপ করেন। বিষয়টি নিয়ে এক হাজারের বেশি সদস্যের স্থানীয় একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেন। সবাই তাকে সাধুবাদ জানালেও অর্থ সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসেনি তখনও।
এর পর কোথাও থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে অবশেষে স্ত্রীর গহনা এক আত্মীয়ের কাছে ১৬ হাজার টাকায় বন্ধক রেখে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করলেন রুবেল।
সিলিন্ডার হাতে পাওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন রুবেল। আর তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা তাকে সাধুবাদ জানান। অনেকেই তাকে মানবতার ফেরিওয়ালা বলে সম্বোধন করছেন।
রুবেল দেওয়ানের বাড়ি চাঁদপুর সদরের বাগাদী ইউনিয়নের ইসলামপুর গাছতলা এলাকায়। তার বাবার নাম ইদ্রিস দেওয়ান। গ্রামীণফোন কোম্পানির ফিল্ড সুপারভাইজার হিসেবে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত রুবেল।
নিজের এই উদ্যোগের বিষয়ে রুবেল দেওয়ান বলেন, ‘সবাইকে জানানোর পর তাকে কমিটি করতে, মিটিং করতে বলেছিল। আমি ভাবলাম এসব করতে গিয়ে অনেক দেরি হয়ে যাবে। তাই উপায় না দেখে স্ত্রীর গহনা বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করেছি। আমি জানি অক্সিজেন ব্যবহারের নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন আছে। আজ (শুক্রবার) একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে এলাকাবাসীকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করব।’
তিনি জানান, ‘গহনা বন্ধক দিতে নিয়ে যাওয়ার সময় স্ত্রী বাধা দেননি। এতে তার সম্মতি ছিল। সে নিজেও আমাকে সাধুবাদ জানিয়েছে, যা আমাকে আনন্দিত করেছে।’
এ সেবাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে কিনা প্রশ্নে রুবেল বলেন, ‘অবশ্যই। তবে এ জন্য এলাকাবাসীসহ বিত্তশালীদের এগিয়ে আসতে হবে। আমার এক চাচাত ভাই সহায়তা করতে চেয়েছে। এভাবে দেখি কত দূর আগানো যায়।’