সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বেগম খালেদা জিয়ার ৮ মামলা বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ : নাহিদ ইসলাম বিপিএলে দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন বরিশাল আয়নাঘর পরিদর্শনে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা ভাঙা হলো ধানমন্ডির ৩২শেখ মুজিবের বাড়ি, পোড়ানো হলো সুধা সদন আজ শেষ হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপ অভিযানে বিচ্ছিন্ন অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিপিএল টি-টোয়েন্টি ফাইনালে চট্টগ্রাম ও খুলনা বাজেটের খসড়া উপস্থাপন প্রধান উপদেষ্টার কাছে বুধবার যেসব জায়গায় বুধবার ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সব দলের স্কোয়াড ওয়াশিংটনকে ডব্লিউএইচও থেকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান চট্টগ্রামকে হারিয়ে বিপিএলের ফাইনালে বরিশাল আ. লীগের লিফলেট বিতরণ করলেই গ্রেপ্তার : প্রেস সচিব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত জাপানের জানুয়ারি মাসে শ্রীলঙ্কায় ৬৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যহ্রাস জুলাই অভ্যুত্থান এবারের বইমেলায় নতুন তাৎপর্য নিয়ে এসেছে : প্রধান উপদেষ্টা সেন্টমার্টিনে আজ থেকে পর্যটক যাতায়াত বন্ধ সেনাবাহিনীকে নিয়ে আনন্দবাজারে প্রকাশিত সংবাদ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জুলাইয়ের আন্দোলনে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল রাজনৈতিক নেতৃত্ব: এইচআরডব্লিউ টিম কম্বিনেশনের কারণে শান্ত একাদশে নেই: তামিম ইকবাল বিদেশি শিল্পী আনা নিরুৎসাহিত করতেই ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ কনসার্টের আয়োজন করা হয়: তারেক রহমান জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে কোনো কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে না: প্রেস সচিব টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের চাহিদা মেটাতে চাল, ডাল ও চিনি সংগ্রহ করবে সরকার গাছ কাটতে লাগবে অনুমতি: হাইকোর্টের রায় জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলে ট্রাম্পের আদেশ সাময়িক স্থগিত ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে বিশ্বকাপের আশা টিকিয়ে রাখলো বাংলাদেশ আগামী জুলাই মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা প্রকাশ

বৈশ্বিক মহামারী করোনায় ও ডেঙ্গুতে ত্রাহি অবস্থা

স্বাধীনতা২৪.কম
  • Update Date : শনিবার, ৭ আগস্ট, ২০২১

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশের মানুষের এমনিতে ত্রাহি অবস্থা। যেখানে ঘর থেকে বের হলেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার শেষ নেই। আর এখন ভোগান্তির মাত্রায় যুক্ত হয়েছে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন ধরনের মশার উৎপাতে বাসাবাড়িতে টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। আর বাইরে বের হলে করোনাভাইরাসের ছোবল- এই দুইয়ে মিলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ এখন কঠিন বিপদের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। এ অবস্থা থেকে কবে মুক্তি মিলবে, কবে মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে তাও অনেকটা অজানা।

 

ব্যাংকার আরিফুর রহমান। পরিবার নিয়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর চারতলায় বসবাস করেন। সেখানেও মশার উৎপাত কম নয়। তিনি বলেন, চারতলায় থাকলেও মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। প্রতিদিন কত মশা মারা যায়! চার পাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ, বছরের পর বছর ড্রেন নোংরা থাকে, কখনো পরিষ্কার করতে দেখি না। মশা মারার জন্য কবে স্প্রে করেছে, তাও জানা নেই। এখন আবারো করোনাভাইরাস সংক্রমণ উচ্চহারে শুরু হয়েছে। সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়।

 

দিন আনে দিন খেটেখাওয়া একজন শ্রমজীবী মো: নাজমুল। পরিবার পরিজন নিয়ে থাকেন রাজধানীর বাসাবোতে। তিনি বলেন, করোনার আতঙ্ক তো আছে। কিন্তু কী করব, পেটের তাগিদে ঘর থেকে বের হই। করোনার মধ্যে আবার নতুন করে শুরু হয়েছে মশার উৎপাত। প্রতিদিন মশা মারতে মারতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। কিন্তু যাদের মশা মারার দায়িত্ব তারা কি মারছে? তারা এসির মধ্যে বসে তামাশা দেখে! শুধু যাত্রাবাড়ী, বাসাবো, গোড়ান, খিলগাঁও, ওয়ারী এমন নয়; পুরো রাজধানীর বাসাবাড়ি ও অলিগলিতে মশার উৎপাত তীব্র আকার ধারণ করেছে। বসে থাকলেই একঝাঁক মশা এসে ঝাপটে ধরে।

 

গত বুধবার রাতে এটিএন নিউজের অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর সারোয়ার হোসেনের একমাত্র সন্তান শাবাব সারোয়ার মাত্র ১০ বছর বয়সে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। জাতীয় দলের ফুটবলার মোস্তাফা আনোয়ার পারভেজের দুই ছেলেরই ডেঙ্গু হয়। বড় ছেলে রাহিল ২২ জুলাই আক্রান্ত হয়। সাত বছরের ফুটফুটে ওই ছেলেটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ জুলাই না-ফেরার দেশে চলে যায়।

 

এরকম সম্প্রতি অন্তত ১০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। গত ১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, গত জুলাই মাসেই এ বছরের সর্বোচ্চসংখ্যক ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। শুধু জুলাই মাসেই দুই হাজার ২৮৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর তাদের ৯৯ শতাংশই ঢাকায়।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২১৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন ২১৮ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ২০৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ১০ জন। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিদিনই দুই শতাধিক ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। আর দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এ নিয়ে মোট মারা গেছেন ২২ হাজার ১৫০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ হাজার ১৫ জনের পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৬০৬ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হয়েছে ১৩ লাখ ৩৫ হাজার ২৬০ জন।

 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে নানা অব্যবস্থাপনা থাকলেও অন্তত সরকার জনগণের জন্য টিকার ব্যবস্থা করছে। ৭ আগস্ট থেকে গণটিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। কিন্তু খোদ রাজধানীতে প্রতি বছর ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন জাতের মশার উৎপাতে মানুষ অতিষ্ঠ হলেও সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের শুধু ফাঁকা বুলি আওড়ানো ছাড়া তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ে না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মাঝে মধ্যে বিভিন্ন ভবনে অভিযান চালিয়ে ভবন মালিকদের জরিমানা করে। কিন্তু রাজধানীতে অসংখ্য ড্রেন, নর্দমা, খানাখন্দ আছে, বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন জাতের মশার জন্ম হচ্ছে। এসব বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা একেবারে উদাসীন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জরিমানা করার বিষয়টি নিয়েও অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে খোদ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেন, করোনার পাশাপাশি নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে ডেঙ্গু। ডেঙ্গু যেন মহামারীতে রূপ না নেয়, সে জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশনের এখনি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। বাসাবাড়িতে পানি জমে এডিস মশা সৃষ্টি হচ্ছে কি না এ জন্য বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, বিভিন্ন মানুষকে সচেতন করার জন্য জরিমানা করা হচ্ছে। কিন্তু সিটি করপোরেশনের অধীনে শত শত ড্রেন-নর্দমা আছে, সেখান থেকে অসংখ্য মশা জন্ম নিচ্ছে। সে জন্য জনগণ কার বিরুদ্ধে মামলা করবে, কাকে ফাইন করবে?

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ও ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভের সিনিয়র সহকারী অধ্যাপক আবু সায়েম হীরা বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ উচ্চহারে, তার সাথে যুক্ত হয়েছে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। দেশের জনগণ কঠিন বিপদের মধ্যেই রয়েছে। এ সঙ্কটের পেছনে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সমন্বয় ও সিদ্ধান্তহীনতা এবং টেকসই উন্নয়নের নামে এলোমেলোভাবে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণই মূলত এর জন্য দায়ী।

 

তিনি বলেন, রাজধানীতে অনেক নর্দমা, খাল, খানাখন্দ, ড্রেন পড়ে আছে সিটি করপোরেশন কি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করছে? স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় যখন তখন বাসাবাড়িতে হানা দিয়ে জরিমানা করছে, এটি কি সমাধান? যদি খালগুলো, ড্রেন-নর্দমাগুলো যথাসময়ে পরিষ্কার করত, জলাবদ্ধতা রোধ করতে পারত, মশা নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়ত ফগিং করত, স্প্রে করত তা হলে ডেঙ্গু মশার এত প্রকোপ বৃদ্ধি পেত না।

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *