করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুরোধে সরকারঘোষিত টানা কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের পর বুধবার (১১ আগস্ট) থেকে চিরচেনা রূপে ফিরতে শুরু করেছে রাজধানী ঢাকা। যান্ত্রিক নগরীখ্যাত ঢাকাসহ সারাদেশে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এতদিন রাস্তাঘাটে যানবাহন ও মানুষের চলাচল ছিল সীমিত।
করোনা সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে গত ১ জুলাই থেকে বিধিনিষেধ শুরু হয়। তবে ঈদ উপলক্ষে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই ভোর ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আবারও বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়। পরে তা আরেক দফা বাড়িয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়। যা বুধবার সকাল থেকে শিথিল করা হয়।
বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিধিনেষেধের আগে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে রাজধানীতে তুলনামূলক কম সংখ্যক বাস চলাচল করছে। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী সড়কে অর্ধেক সংখ্যক বাস চলাচল করায় সকালে গণপরিবহন সংকটে পড়েছেন যাত্রীরা। সকাল থেকেই সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীরা ভিড় করেন সড়কে। বিভিন্ন মোড় থেকে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী তুলছে বাসগুলো। বাড়তি ৬০ শতাংশ ভাড়া প্রত্যাহার করায় বাস কন্ডাক্টররা নিচ্ছে আগের ভাড়া। ভোর থেকেই বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের তৎপরতা দেখা যায়।
কুরিয়ার সার্ভিসে কর্মরত আনোয়ার হোসেন পল্টন মোড় থেকে যাবেন রাজধানীর মিরপুর ১০ নাম্বারে। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বাসের জন্য অপেক্ষা করেও ৩০মিনিটেও বাসে না উঠতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে অর্ধেক বাস চলার নির্দেশনা দেওয়াতে এমন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। যে বাসগুলো চলছে কোনটাতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। সিটি ব্যাংকে কর্মরত শামীমা ইসলাম বংশাল থেকে যাবেন ধানমন্ডি। তবে সময়মত গাড়ি না পাওয়ায় পড়তে হয়েছে গুলিস্তানের ৪৫ মিনিটের জানযটে । তিনি বলেন, বাসের সংখ্যা কম থাকায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে অন্যান্য পরিবহন বেশি থাকায় জানযট লেগে আছে।
এছাড়া সড়কে ব্যাপক প্রাইভেট কার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। এদিকে রাজধানীর রামপুরা, হাতিরঝিল, কাওরানবাজার, মোহাম্মদপুর, পল্টন ঘুরে যানযট দেখা গেছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে বিধিনিষেধ শিথিল কার্যকর হয়েছে। যার ফলে বুধবার সকাল থেকে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। এছাড়া নির্দেশনা অনুযায়ী শপিংমল, মার্কেট ও দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে খোলা রাখা যাবে। শিল্প-কারখানা চালু থাকবে। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁয় অর্ধেক আসন খালি রেখে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।