অভ্যন্তরীণ নদ-নদী থেকে এবং সমুদ্র থেকে সারা বছর কম বেশি ইলিশ আহরিত হয়। তবে আষাঢ়, শ্রাবন ও ভাদ্র মাস এই ৩ মাস ইলিশের প্রধান মৌসুম। গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ ধরতে সমুদ্রে যাওয়া ট্রলারগুলো বৈরি আবহাওয়ার কারনে মাঝ পথ থেকেই ফিরে এসেছিলো। আবহাওয়া পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ার পর গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যাওয়া ট্রলারগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেয়েছে। সমুদ্রে যাওয়ার ১২ থেকে ১৫ দিন পর ট্রলার বোঝাই ইলিশ নিয়ে উপকূলে ফিরে এসেছে জেলেরা। বৃহস্পতিবার বরিশাল পোর্ট রোড মোকামে এসেছে ৬টি মাছ ধরা ট্রলার। প্রতিটি ট্রলারে ছিলো ১শ থেকে দেড়শ মন বিভিন্ন সাইজের ইলিশ।
শুক্রবারও ৪টি সামুদ্রিক ট্রলার এসেছে পোর্ট রোড মোকামে। এছাড়া পটুয়াখালীর মহিপুর মোকাম থেকেও ট্রাকে ট্রাকে ইলিশ এসেছে বরিশালে। আজও প্রায় ৮শ মন ইরিশ এসেছে পোর্ট রোড মোকামে। দুই দিন ধরে সামূদ্রিক ইলিশে সয়লাব পোর্ট রোড মোকাম। ইলিশ বিকিকিনিতে ব্যস্ত আড়তদার-শ্রমিকদের কলকাকুলিতে মুখরিত পোর্ট রোড মোকাম।
সমূদ্রে আশাতীত মাছ পাওয়ায় খুশি জেলেরা। আহরিত মাছ বিক্রি করে আবারও গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যাওয়ার কথা বলেন সামুদ্র্রিক জেলে মো. গফুর মল্লিক ও মো. রফিকুল ইসলাম। এভাবে সমুদ্রে মাছ পাওয়া গেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালোভাবেই দিন কাটানোর আশা তাদের।
পোর্ট রোডের ইলিশ ব্যবসায়ী কাঞ্চন সাহা বলেন, কেবল ইলিশ মৌসুম শুরু হয়েছে। গত দুই দিনে অনেক সামুদ্রিক ইলিশ এসেছে। সমুদ্রের ইলিশ গড়পরতা ২২ থেকে ২৩ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হয়েছে। আগামী দিনে সমুদ্র থেকে আরও ইলিশ আহরিত এবং দাম আরও কমবে বলে আশা করেন তিনি।
ইলিশ আড়তদার মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ৪ মাস পর বরিশাল মোকামে প্রথম অনেক ইলিশ এসেছে। আগে স্থানীয় বিভিন্ন নদ-নদীর ৪০ থেকে ৫০ মন ইলিশ আসতো মোকামে। গত দুই দিনে প্রায় ২ হাজার মন ইলিশ এসেছে। সামনের দিনে ইলিশ আহরন বাড়বে এবং দামও কমবে বলে আশা করেন তারা।
আড়তদার সজল দাস বলেন, সমুদ্রে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পড়ায় জেলে, আড়দার ও মৎস্য শ্রমিক সবাই খুশী। বরিশাল মোকামে অনেক দিনের মাছের আকাল দূর হলো। চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো ইলিশে সয়লাব হয়েছে বরিশাল মোকাম। এভাবে মাছ ধরা পড়লে ইলিশ মাছ সর্বসাধারনের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে বলে তিনি জানান।
বরিশাল মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, মৌসুমের শুরুর দিকে জেলেদের জালে মাছ ধরা না পড়ায় কিছুটা চিন্তিত ছিলো মৎস্য বিভাগ। দেরীতে হলেও বরিশাল মোকামে ইলিশের খড়া কেটেছে। আগামী দিনগুলোতে সমুদ্রে এবং স্থানীয় ননদ-নদীতে আরও ইলিশ আহরিত হবে এবং ইলিশের দামও কমবে বলে আশা করে মৎস্য বিভাগ।
সামুদ্রিক বিভিন্ন সাইজের ইলিশ গড়ে ২২ থেকে ২৩ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হলেও স্থানীয় নদী-নদী থেকে আহরিত কিছু ইলিশ চড়া দামে বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পোর্ট রোডের খুচরা মাছ ব্যবসায়ী মো. হারুন।