উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে তিস্তা অববাহিকায় আবারও প্লাবিত হয়েছে চরের নিম্নাঞ্চল গ্রামগুলো। বৃহস্পতিবার রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা তিস্তা ব্যারাজ দোয়ানী পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপরে। পানির চাপে তিস্তা ব্যারাজ রক্ষায় ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। শুক্রবার সকালে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার ভয়াবহ বন্যা দেখা দিতে পারে এমনটি ধারনা করা হচ্ছে। যে কারণে তিস্তা পাড়ের লোকজনদের সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, তিস্তা ব্যরাজ এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতোমধ্যে তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি হয়েছেন চরাঞ্চলের লোকজন। পানি বৃদ্ধির ফলে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সিঙ্গীমারী, সিন্দুনা, পাটিকাপাড়া ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈলমারী, নোহালী, চরবৈরাতী, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের চৌরাহা, দক্ষিণ বালাপাড়া, কুটিরপাড়, চর গোবরধন, এবং সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মহিষখোচা ইউনিয়নের সলেডি স্পার-২ এর ভাটিতে বাহাদুরপাড়া এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে গ্রামটির ৮ থেকে ১০টি পরিবার তাদের বাড়ীঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। ভাঙ্গন রোধের জন্য এলাকাবাসী সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে এক হাজার জিও ব্যাগ বরাদ্দ নিয়েছেন। পানি কমার সাথে সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ড গ্রামটিকে তিস্তার ভাঙ্গন রোধের জন্য চেষ্টা চালাবেন।
দোয়ানী-ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লা আল মামুন বলেন, তিস্তা নদী পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ভারত থেকে প্রচণ্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। এ কারণে পানির চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। আরও কি পরিমাণ পানি আসবে তা ধারণা করা যাচ্ছে না।