দেশে করোনাভাইরাসের দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও কিছুটা কমে এসেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২১ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে, যা ২৬ মের পর সবচেয়ে কম। সেদিন ১৭ জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল।
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারে দেশে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে অগাস্ট মানে এক দিনে মৃত্যুর সংখ্যা আড়াইশও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত কিছুদিন ধরে সংক্রমণের হার কমার সঙ্গে সঙ্গে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও কমছে।
গত এক দিনে সোয়া ২২ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে দেশে ৯৮০ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মে মাসের পর শনিবার প্রথমবারের মত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের নিচে নেমে আসে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটের মধ্যে জুলাই মাসে এক দিনে শনাক্ত রোগী ১৬ হাজারও ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৫ লাখ ৫১ হাজার ৩৫১ জনে। তাদের মধ্যে ২৭ হাজার ৪১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এ রোগে।
রোববার নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ, যা আগের দিন ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ ছিল।
দেশে সাড়ে ছয় মাস পর দৈনিক নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত কোভিড রোগীর হার গত সপ্তাহে ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসে। জুলাই মাসে তা ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ৬৬৮ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের দুই তৃতীয়াংশের বেশি।
যে ২১ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ১০ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের। মৃতদের মধ্যে ১৪ জনই নারী, পুরুষের সংখ্যা তার অর্ধেক।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ১ হাজার ৩১২ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ১১ হাজার ৪৭৯ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ২২ হাজার ২২১টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৯৬ লাখ ১৯ হাজার ১৫০টি নমুনা।
এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ১৩ শতাংশ; মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১০ জন বাদে চট্টগ্রাম বিভাগের ৪ জন, রাজশাহী বিভাগের ২ জন, খুলনা বিভাগের ১ জন, সিলেট বিভাগের ৩ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন ১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ১০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ৭ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে,১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।
তাদের মধ্যে ১৭ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ৪ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। গত ৩১ অগাস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ অগাস্ট তা ২৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৭ লাখ ৩৯ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২৩ কোটি ১২ লাখের বেশি রোগী।