বিএনপির কর্মসূচি প্রমাণ করে তারা দেশে অস্থিরতা চায় : তথ্যমন্ত্রী
স্বাধীনতা২৪.কম
Update Date :
বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৩
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির কর্মসূচি প্রমাণ করে তারা দেশে অস্থিরতা চায়। তিনি বলেন, ‘বিএনপির সাম্প্রতিক সময়ের কর্মসূচিই প্রমাণ করে যে, তারা দেশে একটা অস্থিরতা তৈরি করতে চায়। তারা ১০ ডিসেম্বরকে ঘিরেও আগুনসন্ত্রাস চালিয়েছে। আগামী ১১ জানুয়ারি তারা আবার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সেখানেও অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা তারা চালাবে।’ সেই সাথে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ডিসেম্বরের ১০ তারিখ যেমন সতর্ক পাহারায় ছিলাম এবং গত ৩০ তারিখ তারা ঢাকায় গণমিছিল ডেকেছিল, সে দিনও আমরা সতর্ক পাহারায় ছিলাম। ভবিষ্যতেও তারা এই কর্মসূচির নামে যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা উচিত জবাব দেবো।’ তথ্যমন্ত্রী আজ দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। সরকার সেই ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে এবং করবে। কিন্তু তারা রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সহিংসতা করার অপচেষ্টা চালালে জনগণ প্রতিহত করবে, জনগণের সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা থাকবে।’
‘সরকারের বিদায় চায় বিএনপি ’ এ প্রশ্নে ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপি সাড়ে ১৩ বছর ধরেই সরকারের বিদায় চাচ্ছে। বিডিআর বিদ্রোহ, সেখানে তো তাদের ইন্ধন ছিলো, তখন থেকেই তারা সরকারের বিদায় চাচ্ছে। সরকারকে বিদায় দিতে হলে নির্বাচনে আসতে হবে এবং তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে হবে। অন্য কোনো পথে সরকারের বিদায় দেওয়া তো সম্ভব নয়, এটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। কিন্তু তারা সেটিতে বিশ্বাস করে না, তারা পানি ঘোলা করে মাছ শিকার করতে চায়, সে সুযোগ তারা পাবে না।’
তথ্যমন্ত্রীর সাথে অভিনয় শিল্পী সংঘের মতবিনিময় : এর আগে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দেশের টেলিভিশন নাট্যশিল্পীদের সংগঠন অভিনয় শিল্পী সংঘের সাথে মতবিনিময় করেন। মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম, সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজু খাদেম, নির্বাহী সদস্য মাজনুন মিজান, সদস্য হৃদি হক, সংগীতা চৌধুরী ও আইনুন নাহার বৈঠকে অংশ নেন।
শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব অভিনয় শিল্পকে পেশা হিসেবে ঘোষণা করা, শিল্পীদের জন্য গঠিত কল্যাণ ট্রাস্টে নাট্যশিল্পীদের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, টেলিভিশন নাটক ও সিরিয়াল নির্মাণে উৎসাহদানসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর, প্রথম বেসরকারি টেলিভিশনের লাইসেন্স দেওয়া শুরু করেন। এরপর ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ১১ বছরে টেলিভিশনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১০টিতে। আমরা ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে সরকার গঠন করার পর আজ পর্যন্ত লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে ৪৬টি, সম্প্রচারে আছে ৩৬ টি টেলিভিশন চ্যানেল এবং আরো কয়েকটি খুব সহসা সম্প্রচারে আসবে। এভাবে ব্যাপক বিকাশ ঘটার কারণে টেলিভিশন শিল্প আমাদের ছেলেমেয়েদের একটি বড় কর্মক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
ড. হাছান জানান, ‘কোনো কোনো টেলিভিশন শুধু বিদেশি সিরিয়াল নির্ভর ছিল, পরে আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পরিপত্র দিয়ে একটি টেলিভিশন চ্যানেল একটির বেশি বিদেশি সিরিয়াল একই সময়ে দেখাতে পারবে না সেটি কার্যকর করেছি। ফলে আমাদের দেশেও এখন সিরিয়াল নির্মাণ হচ্ছে। আমরা আরো বিধি করেছি, বিদেশি শিল্পী দিয়ে বিজ্ঞাপন নির্মাণ করলে প্রচলিত ট্যাক্সের বাইরে শিল্পী প্রতি দুই লাখ টাকা এবং যে টেলিভিশন চ্যানেল সেই বিজ্ঞাপন দেখাবে তাদেরকে বিশ হাজার টাকা সরকারের কোষাগারে দিতে হবে। কারণ আমাদের শিল্পীরা অনেক স্মার্ট এবং ভালো অভিনয় করে, দেখতেও সুন্দর। তাদের বাদ দিয়ে বিদেশিদের নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা আমরা খুঁজে পাইনি।’
শিল্পীদের দাবি দাওয়া প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যতটুকু সম্ভব সবই পূরণ করার চেষ্টা করছি। যে সব দাবি দাওয়া ছিল না, সেগুলোর ব্যাপারেও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। শুধু তাই নয়, আমাদের পরিকল্পনা আছে টেলিভিশন মাধ্যমে যারা অভিনয় করেন, তাদের জন্য জাতীয় পুরস্কারের প্রবর্তন করা যায় কি না, সেটি আমরা ইতিমধ্যেই আলোচনায় এনেছি।’ সূত্রঃ বাসস