প্রতি ঈদেই গ্যালারি উপচেপড়া হাজার হাজার দর্শকের মুখরিত মঞ্চে হানিফ সংকেত দর্শকদের জানান ঈদ মোবারক এবং সাদর সম্ভাষণ। থাকে বর্ণাঢ্য আয়োজন। তবে এবারের ইত্যাদির সেই চিরচেনা চিত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম ঘটবে। কারণ করোনা ভাইরাস। তবে ঈদের পরদিন ঈদের ইত্যাদির যে ঐতিহ্যবাহী দৃশ্যের জন্য দর্শকরা অপেক্ষা করেন তা থেকে দর্শকরা যাতে নিরাশ না হয় সেজন্য এবারও ভিন্নভাবে সাজানো হয়েছে ঈদের বিশেষ ইত্যাদি। শুক্রবার রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচারিত এই ‘ইত্যাদি’। যার রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত।
করোনায় এবার ব্যতিক্রমধর্মী ঈদ ইত্যাদি- এমন একটি শিরোনোমে ইত্যাদির চিরচেনা মুখ হানিফ সংকেতের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ঈদুল ফিতরের আগে পোস্ট করে জানান। করোনাকালের সেই ব্যতিক্রমী ইত্যাদি দেখেছেন দর্শক। তার ধারবাাহিকতা থাকছে এবারের ইত্যাদিতেও। তবে এবারের ইত্যাদিতে থাকছে দারুণ কিছু চমক।
এবারের ‘ইত্যাদি’র পর্ব ধারণ করা হয়েছে ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়িতে অবস্থিত মেট্রোরেল লাইন-৬ এর ডিপোতে। গত ১৬ জুলাই দেশের প্রথম দূর নিয়ন্ত্রিত বৈদ্যুতিক মেট্রোরেলের প্রথম গন্তব্যস্থল সুবিশাল ওয়ার্কশপে ধারণ করা হয় এই পর্বটি। করোনার কারণে এই প্রথম স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠানে কোন দর্শককে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সেই হিসাবে এটিই হচ্ছে ইত্যাদির দর্শক শুণ্য প্রথম অনুষ্ঠান।
মেট্রোট্রেনের সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে নির্মাণ করা আলোকিত মঞ্চে ইত্যাদির এই ধারণ অনুষ্ঠান চলে বিকাল ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত।
রয়েছে দুটি। খ্যাতিমান গীতিকার মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের কথায়, মনোয়ার হোসেন টুটুলের সুরে, শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন গেয়েছেন একটি দেশাত্মবোধক গান। সম্প্রতি একটি গান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনার ঝড় তুলেছে। তৈরি হয়েছে ধূম্রজাল।
ইত্যাদির এবারের পর্বে সেই গানটির প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সেই চিকিৎসকদের, যাদের নৃত্যে গানটি আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পাশাপাশি আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে শিল্পী তসিবাকে। সংগৃহীত কথা ও সুরে ইত্যাদির এবারের পর্বে তসিবার জন্য একটি গান নুতনভাবে রেকর্ড করা হয়। গানটির র্যাপ অংশ গেয়েছেন মাহমুদুল হাসান (দাদু)। গানটির সংগীতায়োজন করেছে তরুণ সংগীত পরিচালক নাভেদ পারভেজ। গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন ইত্যাদির নিয়মিত নৃত্য শিল্পীরা।
এবারের ইত্যাদিতে মেট্রোট্রেনের ইতিহাস, অগ্রগতির বিভিন্ন কারিগরী দিক, সুবিধাসমূহের উপর রয়েছে তিনটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন। রয়েছে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার প্রকৌশলী মো. আমিনউল্লাহ’র উপর একটি উদ্বুদ্ধকরণ প্রতিবেদন।
ইত্যাদির দর্শকপর্বের নিয়ম অনুযায়ী প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপস্থিত দর্শকের মাঝখান থেকে ৪ জন দর্শক নির্বাচন করা হয়। কিন্তু এবারের ইত্যাদিতে কোন আমন্ত্রিত দর্শক না থাকার পরও করা হয়েছে ইত্যাদির নিয়মিত দর্শক পর্ব। কিন্তু দর্শক ছাড়া কিভাবে দর্শক পর্ব? মামা, প্রয়াত অভিনেতা আব্দুল কাদেরের মৃত্যুর পর ভাগ্নে আফজাল শরীফকে এই প্রথম দেখা যাবে ইত্যাদিতে। কিন্তু সেখানে তার ভূমিকা কি থাকবে? এই সব প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়া যাবে ৩০ জুলাই প্রচারিত ইত্যাদিতে।
নিয়মিত পর্বসহ এবারও রয়েছে বিভিন্ন সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সরস অথচ তীক্ষ্ণ নাট্যাংশ। পাত্রী দেখার একাল সেকাল, কৌশলী স্বামীর কৌশল, প্রশ্ন আছে উত্তর নেই, শিশু মনস্তত্ত্বে প্রযুক্তির প্রভাব, সেলফাইটিস, নাটকের নাম নিয়ে নোংরামী, প্রযুক্তিমুক্ত পরিবেশসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ। বরাবরের মত এবারও ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্প নির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম।
এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন-মাসুম আজিজ, আমিরুল হক চৌধুরী, সোলায়মান খোকা, জিয়াউল হাসান কিসলু, শবনম পারভীন, আফজাল শরীফ, সুভাশিষ ভৌমিক, আমিন আজাদ, কামাল বায়েজিদ, লাভলী ইয়াসমিন, লিনা, নিপু, জামিল হোসেন, জিয়াউল হক পলাশ, শামীম, আনন্দ খালেদ, সজল, সাজ্জাদ সাজু, গুলশান আরা, নজরুল ইসলাম, সুবর্না মজুমদার, ইমিলা, তিন্নি গ্লোরিয়া, ইরা, আসমা, মতিউর রহমান, রিমু, নিসা, তানিয়া, পাপিয়াসহ আরো অনেকে। পরিচালকের সহকারী হিসাবে ছিলেন যথারীতি রানা ও মামুন।
ইত্যাদি নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। ইত্যাদি স্পন্সর করেছে যথারীতি কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড।