বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস আজ রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আবেদন পুনরুজ্জীবিত করলো আপিল বিভাগ বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আমিরাতে ভিসা সমস্যা দ্রুত সুরাহার আশ্বাস রাষ্ট্রদূতের বেশ কিছু প্রকল্প অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে শেষ হবে : নাহিদ ইসলাম মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে করা মামলার মামলায় আপিলের অনুমতি পেলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫৭ জনের নামে হত্যা মামলা সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ গ্রেপ্তার প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও বিশেষ দূতের সাভার-আশুলিয়ায় পোশাক শিল্প পরিদর্শন হাইকোর্টে কিছু বিচারক আছেন, যাদের ব্যাপারে সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে : অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল ২৪ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে রিভিউ শুনানি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেটের উৎস চিহ্নিত করে প্রয়োজনে বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগের আহ্বান আসিফ মাহমুদের ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যই ছিল জনগণের টাকা মেরে বিদেশে পাচার করা: অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী নির্বাচনের সময় নিয়ে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের লক্ষ্যে শিগগিরই সার্চ কমিটি গঠন আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ফের বিভাগ চালু হচ্ছে নবম-দশম শ্রেণীতে ‘জুলাই ৩৬’ নিহতদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে হাইকোর্টের নির্দেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিতের অনুরোধ সরকারের সিনওয়ার হত্যার পর ”প্রতিরোধ’ জোরদার করার দিকে নিয়ে যাবে’: ইরান বিমান বিধ্বংসী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সিরিয়ার লাতাকিয়ায় ইসরাইল বিমান হামলা চালিয়েছে : রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ইরানের বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ‘শত্রুতামূলক পদক্ষেপ’ : ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তরুণ বিপ্লবীদের আঁকা গ্রাফিতি পরিদর্শন ড.ইউনূসের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভুটানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বিশেষ নির্দেশে বিএফআইডিসির ১৫৫ একর জমি উদ্ধার জাতীয় আট দিবস বাতিল হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সকল মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে সিন্ডিকেট শনাক্তে কাজ করছে সরকার মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ প্রধান উপদেষ্টার সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় প্রকাশ করা হবে

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ

স্বাধীনতা২৪.কম
  • Update Date : বুধবার, ৪ আগস্ট, ২০২১

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে শহুরে মানুষদের অনেকেই এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চিড়েচ্যাপ্টা।

কফিল উদ্দিন থাকেন ঢাকার মিরপুরের রূপনগরে। এক সময় প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার ছিলেন। কক্সবাজারের রামু উপজেলায় একটি সেতুর কাজ পেয়েছিলেন। কিন্তু নির্মাণের পরপরই সেতুটি ধসে পড়লে পুঁজি হারিয়ে তার তার স্বপ্নও ধসে পড়ে। এরপর গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে জায়গা-জমি বিক্রি করে সংসার পাতেন ঢাকায়। এখন তিনি বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির তৈরি নতুন ফ্ল্যাটের অভ্যন্তরীণ ‘ফিনিশিংয়ের’ কাজ করে মোটামুটি চলেই যাচ্ছিল। কিন্তু মহামারীতে তাতে ঘটেছে ছন্দপতন। কফিল উদ্দিনের চার সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে এবার এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়। মেজ ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। বাকি দুই সন্তান পড়ে চতুর্থ ও প্রথম শ্রেণিতে।

মহামারী নিয়ন্ত্রণের লকডাউনের কারণে কাজ না থাকায় আর্থিক সঙ্কটে পড়ে জমা কিছু টাকা দিয়েই অন্য অনেকের মতো দিন পার করছিলেন কফিল। কিন্তু নিত্যপণ্যের বাজার দর তাতেও ফেলেছে টান।

তিনি বলেন, “দেশ ও মানুষ বাঁচানোর জন্য সরকার লকডাউন দিয়েছে, এটা মেনে নিতে হবে। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, বাজারে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে।

“এক বছর আগে যে সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১০৫ থেকে ১১০ টাকা ছিল, সেটা এখন প্রায় ১৫০ টাকা। গত বছর যে চাল ৫০ টাকা ছিল, সেটা এখন ৬৫ টাকা।”

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, মহামারী শুরুর পর গত এক বছরে মোটা ও সরু দুই ধরনের চালের দামই ১৫ শতাংশের মতো বেড়েছে। সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৪৮ শতাংশ। এছাড়া নিত্য পণ্যের মধ্যে রসুনের দাম ৬৬ শতাংশ, হলুদের দাম ৩১ শতাংশ, চিনির দাম ১৮ শতাংশ, মসুর ডালের দাম ১০ শতাংশ, আটার দাম ৭ শতাংশ বেড়েছে।

দ্রব্যমূল্যের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে জানালেন রূপনগরেরেই এক বাড়ির দারোয়ান আলাল উদ্দিন। তার বেতন ৮ হাজার টাকা, এই টাকায় দিন চলে না বলে তার স্ত্রী গৃহকর্মীর কাজ নিয়েছিল। কিন্তু মহামারীর কারণে তার কাজ গেছে চলে। তার মেয়ে পোশাক কারখানায় কাজ করতেন, তিনিও হারিয়েছেন চাকরি।

আলাল বলেন, “চার হাজার টাকা ঘর ভাড়া দিয়ে বাকি টাকা দিয়ে কোনো রকমে ১৫ দিন পর্যন্ত চলা যায়। তাই এখন এক বেলা খাচ্ছি, আরেক বেলা না খেয়ে থাকছি।”

এমন পরিস্থিতিতে রূপনগরে চায়ের দোকান ফেলে পালিয়ে গেছেন হাতিয়া থেকে আসা আসগর আলী। তার প্রতিবেশী জাহিদ পাটোয়ারী বলেন, “মহল্লার চায়ের দোকানের ব্যবসার সময় হচ্ছে সন্ধ্যা বেলায়। লকডাউনে পাঁচটার পর দোকান বন্ধ রাখতে হয়। তাই সে ঠিকমতো ব্যবসা করতে না পেরে দেনায় পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত টিকতে না পেরে এলাকা থেকে চলে গেছে।” লকডাউনের মধ্যে বেড়ে গেছে নিত্যপণ্যের দাম; পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার অজুহাত দিচ্ছে বিক্রেতারা।

 

লকডাউনের মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে তুলনামূলক ভালো থাকা রিকশাচালকরাও অসন্তুষ্ট দ্রব্যমূল্য নিয়ে। ২৮ বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালিয়ে আসা কাশেম মিয়া বলেন, লকডাউনের সময় তার আয় বেশি হচ্ছে। “কিন্তু গত বছর ২০০ টাকায় যে জিনিস কিনতাম, সেটা এখন ৩০০ টাকা লাগছে। রোজগার বেশি হলেও খরচ তো বাজারে চলে যাচ্ছে। মাস শেষে কিছুই থাকে না।”

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, গত জুন মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে দেশে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। অর্থাৎ গত অর্থবছরের জুন মাসে যে পণ্য ১০০ টাকা দিয়ে পাওয়া যেত, সেটা এখন কিনতে গেলে প্রায় ১০৭ টাকা লাগছে।

 

কিন্তু নিত্যপণ্যের বাজার যে মানুষের নাভিঃশ্বাস ফেলছে, তা বোঝা যায়, টিসিবির ট্রাকের সামনে কম দামে পণ্য কিনতে মানুষের ভিড় দিন দিন বেড়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। যে মধ্যবিত্তকে সাধারণত এই লাইনে দেখা যেত না, মহামারীকালে এখন তাদেরও দেখা যাচ্ছে। এই সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। সঙ্কটে থাকা পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে তারা পড়ে যাচ্ছে মহাসঙ্কটে। এই পরিস্থিতি নিয়ে অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর বলেন, আসলে সকল সমস্যার ‘মূল কারণ’ হচ্ছে লকডাউন। মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলা ফেরা করতে না পারলে তারা চলবে কীভাবে? তাই সরকারকে প্রথমে লকডাউন খুলে দিতে হবে।

“নিম্ন আয়ের মানুষের বেশিরভাগই রাস্তার পাশে বিভিন্ন রকমের দোকান বা ফেরি করে জীবন ধারণ করেন। লকডাউন দেওয়া হলে তাদের ব্যবসাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অনেকে দোকানের ভাড়া দিতে না পেরে দোকান ছেড়ে দিতে হচ্ছে। ফলে এই খাতের অনেকে একেবারে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।”

এভাবে যারা সবকিছু হারিয়ে ফেলেছেন, তাদেরকে উঠে দাঁড়াতে সরকারি উদ্যোগে মূলধন জোগানোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন  বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিআরআই’র নির্বাহী পরিচালক আহসান মনসুর।

“সরকার উদ্যোগ নিয়ে এসব নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে নিজের পেশায় ফিরিয়ে আনতে পারে। এক্ষেত্রে সরকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করতে পারে।”

এছাড়া লকডাউন ও মহামারীতে শ্রমজীবী যেসব মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছে, তাদর তালিকা করে মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করার সুপারিশও করেন তিনি।

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *