বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
২০২৫ বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করায় বাংলাদেশ যুব হকি দলকে বিমান বাহিনী প্রধানের সংবর্ধনা সংখ্যালঘুদের বিষয়ে তথ্য পেতে ধর্মীয় নেতাদের সাহায্য চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা যড়যন্ত্র মোকাবেলায় আমরা সজাগ আছি, ঐক্যবদ্ধ আছি : প্রধান উপদেষ্টা ঐকমত্য চায় বিএনপি, সঙ্গে নির্বাচনী রোডম্যাপ এক বিজয় করেছ, আরেক বিজয় আসবে : শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐক্য নিয়ে সংলাপে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা সার্কের পুনরুজ্জীবন করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার বাংলাদেশে সুইডেনের বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদন জমা: শেখ হাসিনার আমলে বছরে গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে শেখ হাসিনার রাজনীতিতে ফেরা ‘খুবই কঠিন’ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘেঁষে শাহবাগ থানার নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার ভারী বর্ষণে উগান্ডার পূর্বাঞ্চলে ভূমিধসে ৫০ জনের মৃত্য পাকিস্তানের হুঁশিয়ারি ভারতকে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলেন সুপ্রিম কোর্টে সেবা গ্রহীতার সহায়তায় হেল্পলাইনে দুই মাসে ৭২৩টি কল গ্রহণ আইয়ুব বাচ্চুর অপ্রকাশিত গান দুর্ঘটনার কবলে হাসনাত-সারজিসের গাড়িবহর নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি যা পেয়েছি, সেটাকে আমি সম্মান করি: শাহরুখ খান হার দিয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের দেশের সকল নির্বাচন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হতে হবে: তারেক রহমান ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের ফলো-অন এড়িয়েছে সফরকারী বাংলাদেশ তিন শতাধিক ‘ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন’ হামলায় কাপঁলো ইসরাইল নির্বাচনের তারিখ প্রধান উপদেষ্টাই ঘোষণা দেবেন : প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : সিইসি ক্ষুধা-দারিদ্রের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক জোটের মর্যাদাপূর্ণ সদস্য হলো বাংলাদেশ এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’ নিরীহ কারো নামে মামলা হলেও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে : আইজিপি নির্বাচন যত দেরি হবে ততই ষড়যন্ত্র হবে : তারেক রহমান

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ

স্বাধীনতা২৪.কম
  • Update Date : বুধবার, ৪ আগস্ট, ২০২১

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে শহুরে মানুষদের অনেকেই এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চিড়েচ্যাপ্টা।

কফিল উদ্দিন থাকেন ঢাকার মিরপুরের রূপনগরে। এক সময় প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার ছিলেন। কক্সবাজারের রামু উপজেলায় একটি সেতুর কাজ পেয়েছিলেন। কিন্তু নির্মাণের পরপরই সেতুটি ধসে পড়লে পুঁজি হারিয়ে তার তার স্বপ্নও ধসে পড়ে। এরপর গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে জায়গা-জমি বিক্রি করে সংসার পাতেন ঢাকায়। এখন তিনি বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির তৈরি নতুন ফ্ল্যাটের অভ্যন্তরীণ ‘ফিনিশিংয়ের’ কাজ করে মোটামুটি চলেই যাচ্ছিল। কিন্তু মহামারীতে তাতে ঘটেছে ছন্দপতন। কফিল উদ্দিনের চার সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে এবার এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়। মেজ ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। বাকি দুই সন্তান পড়ে চতুর্থ ও প্রথম শ্রেণিতে।

মহামারী নিয়ন্ত্রণের লকডাউনের কারণে কাজ না থাকায় আর্থিক সঙ্কটে পড়ে জমা কিছু টাকা দিয়েই অন্য অনেকের মতো দিন পার করছিলেন কফিল। কিন্তু নিত্যপণ্যের বাজার দর তাতেও ফেলেছে টান।

তিনি বলেন, “দেশ ও মানুষ বাঁচানোর জন্য সরকার লকডাউন দিয়েছে, এটা মেনে নিতে হবে। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, বাজারে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে।

“এক বছর আগে যে সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১০৫ থেকে ১১০ টাকা ছিল, সেটা এখন প্রায় ১৫০ টাকা। গত বছর যে চাল ৫০ টাকা ছিল, সেটা এখন ৬৫ টাকা।”

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, মহামারী শুরুর পর গত এক বছরে মোটা ও সরু দুই ধরনের চালের দামই ১৫ শতাংশের মতো বেড়েছে। সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৪৮ শতাংশ। এছাড়া নিত্য পণ্যের মধ্যে রসুনের দাম ৬৬ শতাংশ, হলুদের দাম ৩১ শতাংশ, চিনির দাম ১৮ শতাংশ, মসুর ডালের দাম ১০ শতাংশ, আটার দাম ৭ শতাংশ বেড়েছে।

দ্রব্যমূল্যের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে জানালেন রূপনগরেরেই এক বাড়ির দারোয়ান আলাল উদ্দিন। তার বেতন ৮ হাজার টাকা, এই টাকায় দিন চলে না বলে তার স্ত্রী গৃহকর্মীর কাজ নিয়েছিল। কিন্তু মহামারীর কারণে তার কাজ গেছে চলে। তার মেয়ে পোশাক কারখানায় কাজ করতেন, তিনিও হারিয়েছেন চাকরি।

আলাল বলেন, “চার হাজার টাকা ঘর ভাড়া দিয়ে বাকি টাকা দিয়ে কোনো রকমে ১৫ দিন পর্যন্ত চলা যায়। তাই এখন এক বেলা খাচ্ছি, আরেক বেলা না খেয়ে থাকছি।”

এমন পরিস্থিতিতে রূপনগরে চায়ের দোকান ফেলে পালিয়ে গেছেন হাতিয়া থেকে আসা আসগর আলী। তার প্রতিবেশী জাহিদ পাটোয়ারী বলেন, “মহল্লার চায়ের দোকানের ব্যবসার সময় হচ্ছে সন্ধ্যা বেলায়। লকডাউনে পাঁচটার পর দোকান বন্ধ রাখতে হয়। তাই সে ঠিকমতো ব্যবসা করতে না পেরে দেনায় পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত টিকতে না পেরে এলাকা থেকে চলে গেছে।” লকডাউনের মধ্যে বেড়ে গেছে নিত্যপণ্যের দাম; পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার অজুহাত দিচ্ছে বিক্রেতারা।

 

লকডাউনের মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে তুলনামূলক ভালো থাকা রিকশাচালকরাও অসন্তুষ্ট দ্রব্যমূল্য নিয়ে। ২৮ বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালিয়ে আসা কাশেম মিয়া বলেন, লকডাউনের সময় তার আয় বেশি হচ্ছে। “কিন্তু গত বছর ২০০ টাকায় যে জিনিস কিনতাম, সেটা এখন ৩০০ টাকা লাগছে। রোজগার বেশি হলেও খরচ তো বাজারে চলে যাচ্ছে। মাস শেষে কিছুই থাকে না।”

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, গত জুন মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে দেশে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। অর্থাৎ গত অর্থবছরের জুন মাসে যে পণ্য ১০০ টাকা দিয়ে পাওয়া যেত, সেটা এখন কিনতে গেলে প্রায় ১০৭ টাকা লাগছে।

 

কিন্তু নিত্যপণ্যের বাজার যে মানুষের নাভিঃশ্বাস ফেলছে, তা বোঝা যায়, টিসিবির ট্রাকের সামনে কম দামে পণ্য কিনতে মানুষের ভিড় দিন দিন বেড়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। যে মধ্যবিত্তকে সাধারণত এই লাইনে দেখা যেত না, মহামারীকালে এখন তাদেরও দেখা যাচ্ছে। এই সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। সঙ্কটে থাকা পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে তারা পড়ে যাচ্ছে মহাসঙ্কটে। এই পরিস্থিতি নিয়ে অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর বলেন, আসলে সকল সমস্যার ‘মূল কারণ’ হচ্ছে লকডাউন। মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলা ফেরা করতে না পারলে তারা চলবে কীভাবে? তাই সরকারকে প্রথমে লকডাউন খুলে দিতে হবে।

“নিম্ন আয়ের মানুষের বেশিরভাগই রাস্তার পাশে বিভিন্ন রকমের দোকান বা ফেরি করে জীবন ধারণ করেন। লকডাউন দেওয়া হলে তাদের ব্যবসাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অনেকে দোকানের ভাড়া দিতে না পেরে দোকান ছেড়ে দিতে হচ্ছে। ফলে এই খাতের অনেকে একেবারে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।”

এভাবে যারা সবকিছু হারিয়ে ফেলেছেন, তাদেরকে উঠে দাঁড়াতে সরকারি উদ্যোগে মূলধন জোগানোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন  বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিআরআই’র নির্বাহী পরিচালক আহসান মনসুর।

“সরকার উদ্যোগ নিয়ে এসব নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে নিজের পেশায় ফিরিয়ে আনতে পারে। এক্ষেত্রে সরকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করতে পারে।”

এছাড়া লকডাউন ও মহামারীতে শ্রমজীবী যেসব মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছে, তাদর তালিকা করে মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করার সুপারিশও করেন তিনি।

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *