যুবলীগের আইন সম্পাদক হতে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শনিবার (৭ আগস্ট) তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
এ বিষয়ে জানতে ব্যারিস্টার সুমনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার সহকারী হাবিবুর রহমান শামিম ফোনটি রিসিভ করেন। তিনি ইত্তেফাক অনলাইনকে জানান, অব্যাহতির ব্যাপারে এখনো স্যার (ব্যারিস্টার সুমন) আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি বা ইমেইল পাননি। পেলে তিনি মতামত জানাবেন।
শনিবার সংগঠনটির দফতর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের জন্য তাকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ৪ আগস্ট রাত ১২ টা ১ মিনিটে শহীদ শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি দলীয় কর্মসূচিতে স্লোগান দিয়েছিলেন সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন। ‘শুভ শুভ শুভ দিন, শেখ কামালের জন্মদিন’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ওই স্লোগানের ২৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। প্রকাশ্যে রাজনৈতিক প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে স্লোগান দেওয়ায় সরকারি বিধিমালা-১৯৭৯ লঙ্ঘন করেছেন এমন কথাও বলেন কেউ কেউ। যুবলীগ নেতা ব্যরিস্টার সুমন এই ঘটনার সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করেন। যে কারণে তাকে যুবলীগের পদ থেকে অব্যাহতি পেতে হলো।
৬ আগস্ট ফেসবুক লাইভে এসে ব্যরিস্টার সুমন ওই ওসির এই স্লোগানের নিন্দা জানান। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। যা ভালোভাবে নেয়নি সংগঠন।
লাইভে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘শেখ কামাল সাহেবের জন্মদিনে শরীয়তপুরের পালং থানার ওসি আক্তার হোসেনের আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগান দেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এই জিনিসটা দেখার পর আমার কাছে মনে হয়েছে দু-একটা কথা বলা দরকার। আওয়ামী লীগের স্লোগান দেওয়ার মানুষ কী এতই কম যে একজন ওসি সাহেবের এই স্লোগান দিতে হবে। আমি খেয়াল করে দেখলাম যে উনি বলছেন আবেগ থেকেই স্লোগান দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে, আপনি যখন সরকারি দায়িত্বে থাকবেন কিংবা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন, তখন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে আবেগ দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে পানিশমেন্ট নিয়ে আসা উচিত। কিন্তু তিনি এখনো ওই জায়গাতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন।’
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থেকে দলের স্লোগানের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখানোয় তার প্রতি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগেও 'অতিবিপ্লবী' আচরণের জন্য ব্যরিস্টার সুমনকে শোকজ করা হয়েছিল। তবে সেই শোকজের 'সঠিক' জবাব সুমন দিতে পারেননি বলে যুবলীগ থেকে জানানো হয়।