৩৬ বছরের শিরোপা খরা কাটাতে লিওনেল মেসির নেতৃত্বে কাতারে পা রাখে দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। খেলায় প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে।
তবে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও বিশ্বমঞ্চে দেশ দুটি একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে, মোকাবিলা করেছে চ্যম্পিয়নশিপ অর্জনের।
আগামী রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ফাইনালে লুসাইল স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স।
১৯৩০ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম আসরে দুদল প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হয়। যেখানে আর্জেন্টিনা ১-০ গোলে ফ্রান্সকে পরাজিত করে। এর পর থেকে ফাইনালের আগ পর্যন্ত মোট ১২টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দল দুটি। যেখানে আর্জেন্টিনার জয় ৬টি আর ফ্রান্সের জয় ৩টিতে। ড্র হয়েছে ৩টি ম্যাচ।
১২টি ম্যাচের মধ্যে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ রয়েছে ৮টি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ম্যাচ ১টি, বিশ্বকাপের মঞ্চে ৩টি। বিশ্বকাপে খেলা ৩ ম্যাচের মধ্যে আর্জেন্টিনার ২ জয়ের বিপরীতে ফ্রান্সের জয় একটি। তাও সেটি ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে শেষ ষোলোর ম্যাচে। যে ম্যাচটিতে ফ্রান্স আর্জেন্টিনাকে ৪-৩ গোলে পরাজিত করে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয়। শেষ পর্যন্ত সেবার শিরোপা নিয়ে ঘরে ফিরে।
১৯৩০ বিশ্বকাপের পর দ্বিতীয়বারের মতো ১৯৭৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের সঙ্গে দেখা হয় আর্জেন্টিনার। গ্রুপপর্বের ম্যাচটিতে আর্জেন্টিনা ২-১ গোলে ফ্রান্সকে বিশ্ব আসরে দ্বিতীয়বারের মতো হারের স্বাদ দেয়। আর বিশ্বআসরে তৃতীয়বারের মতো সাক্ষাৎ হয় ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে। যেখানে আর্জেন্টিনাকে ৪-৩ গোলে প্রথমবারের মতো পরাজিত করে ফ্রান্স।
ফ্রান্স কোনো প্রকার বাধা ছাড়াই বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিলেও আর্জেন্টিনার পথচলাটা সুখকর ছিল না। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের কাছে হেরে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায়ের শঙ্কা জাগে। সেখান থেকে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে আর্জেন্টিনা এখন টুর্নামেন্টের ফাইনালে। গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে যথাক্রমে মেক্সিকো এবং পোল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নেয়।
শেষ ষোলোর ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোল জয় নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখে। সেখানে নেদারল্যান্ডসকে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে পরাজিত করে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে। সেমিফাইনালে গতবারের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে উড়িয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে আলবিসেলেস্তেরা।
এবারের আসরটি লিওনেল মেসির ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। তাই মেসির জন্য এটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে আর্জেন্টিনার মিশনও ৩৬ বছর পর শিরোপা খরা কাটানোর। সবশেষ আলবিসেলেস্তেরা কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনার নেতৃত্বে ১৯৮৬ সালে শিরোপা ঘরে তুলেছিল। এরপর ১৯৯০ সালে ম্যারাডোনার ও ২০১৪ সালে লিওনেল মেসির নেতৃত্বে ফাইনাল খেললেও প্রতিবারই জার্মানির কাছে হেরে শিরোপার স্বপ্নভঙ্গ হয়।