পতিত স্বৈরাচারের পুনর্বাসন হলে বাংলাদেশ জল্লাদের উল্লাসভূমি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ডেঙ্গু প্রতিরোধে গণসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণকালে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, যারা এতোদিন গুম-খুন আর আয়নাঘরের সংস্কৃতি তৈরি করেছিল, তারা যদি পুনর্বাসন হয়- তাহলে এদেশে আর মানুষ বসবাস করতে পারবে না। এই দেশ হবে জল্লাদের উল্লাসভূমি। এখানে গণতন্ত্র, কথা বলা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চিরদিনের জন্য গোরস্তান হয়ে যাবে, গোরস্থানে চলে যাবে।
তিনি বলেন, কেউ কেউ যখন স্বৈরাচারের পুনর্বাসনের কথা বলে, তখন বিপদজনক বার্তা দেয় জনগণের কাছে। যখন কোনো উপদেষ্টা বলেন, তাদেরকে নিজেদের ঘর গোছানোর জন্য, সেটি অত্যন্ত বিপদজনক বার্তা দেয়। এখনো যারা গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করছেন, আন্দোলন এবং বিপ্লব জুলাই-অগাস্টের এডভাইজার হচ্ছে, বিভিন্ন পদে যাচ্ছেন, তারা যখন এই ধরনের বার্তা (আওয়ামী লীগের ঘর গোছানো উচিত) দেন, তখন এটা সাংঘাতিক ধরনের মরণঘাতী বার্তা। এটা হতে পারে না।
রিজভী বলেন, আজকে যারা বিভিন্ন জায়গায় সেই স্বৈরাচার, গুম-খুন, আয়নাঘরের সংস্কৃতি চালু করেছিল, তারা গণতন্ত্রকামী মানুষকে ধরে নিয়ে গিয়ে সেখানে (আয়নাঘর) বছরের পর বছর আটকিয়ে রেখেছিল, তাদেরকে হাত-পা পঙ্গু করে দিয়েছে। যাদের জীবন কেড়ে নিয়েছে, সেই সমস্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের পোস্টিং দেয়া হচ্ছে কাউকে গুলশানে, কাউকে গুলিস্তানে, কাউকে মিরপুরে, কাউকে আজিমপুরে, সেই সমস্ত ঘাপটি ধরা পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে সেখানে রাখা হয়েছে। এটাই যদি উদ্দেশ্য হয় এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের, তাহলে ছাত্র-জনতার এই আত্মত্যাগের কী হবে?
তিনি বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দেখছি যে- নানা কায়দায় সরকারে ঘাপটি মারা স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী দোসরদের পুনর্বাসন করছে। রোববারও বলেছি, আজকেও বলি, একজন রাষ্ট্রদূত কাতারে ছিলেন, কাতারে কারো (প্রবাসী) যদি ভিসার মেয়াদ শেষ হতো, সেগুলোকে তিনি নবায়ন করতেন না। তিনি (রাষ্ট্রদূত) খবর নিতেন ওই সমস্ত লোক কোন দল করে, কাদের সমর্থক? কারণ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অধিকাংশ প্রবাসী বিএনপির সমর্থক, তাদেরকে তিনি (রাষ্ট্রদূত) নানাভাবে হয়রানি করেছেন, ভিসা নবায়ন করেননি। সেই লোককে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব করা হয়েছে বলে শুনতে পারছি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এভাবে বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মারা ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। একটা সরকারে বিভিন্ন ধরনের লোক থাকতে পারে, নিরপেক্ষ লোকও থাকতে- যারা কাজ করবেন। কিন্তু যারা শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিস্টকে সমর্থন করে বিরোধী দল দমনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে, তাদের যদি আজকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে নিয়োগ পায়, তাহলে এই সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
এসময় বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক পারভেজ রেজা কাকন, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিনসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। রোববার থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ শুরু করে বিএনপি।